রাধা -কৃষ্ণ সংবাদ
-দেবযানী গাঙ্গুলী
কৃষ্ণচূড়া ভালোবেসেছিল রাধাচূড়াকে —
ছোট থেকে পাশাপাশি বেড়ে ওঠা, তবু
যৌবনে যখন ফুলের গৌরব শাখায় শাখায়,
মিলল পলকে পলক –রাধা হলুদ আবীর
ছড়ালো আকাশে …কৃষ্ণের হৃদয়বীণায়
বাজল ঝঙ্কার….এড়িয়ে যাওয়ার ছলনাতে
রাধা যতই মান করুক, কৃষ্ণচূড়ার শিকড়ে
দৃঢ় প্রত্যয় –একদিন ধরা সে দেবেই ।
প্রহর কাটে পাশাপাশি, ঋতু বদল হয় —
কিন্তু মনের কথা আর বলে ওঠা হয়না ।
রাধার প্রতিবেশী -অভিভাবক শাল গাছটা
মাঝেমাঝেই কটমট ক’রে তাকায় কৃষ্ণচূড়ার
দিকে ,বাতাসে কানাকানি কৃষ্ণের মনের কথা
ফিরছে নাকি মৌমাছিদের গানে গানে!
সে কথা জেনেও রাধা মিষ্টি হাসির দুষ্টুমিতে
প্রাণের সখীদের সাথেই মত্ত …
শীতের রিক্ততার দিনে মনে মনে বিবর্ণ
হয়ে ওঠে কৃষ্ণ –তার দীর্ঘশ্বাসে বাতাস
ভারী হয়ে গুমরে ওঠে, মৌমাছি সে খবর
জানিয়ে আসে রাধার মঞ্জরীতে ।
ফাগুন আসে বনে …
কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম প্রেম পুষ্পিত হয়
শাখায় শাখায় — পরাগ মিলনোন্মুখ …
তার ঝিরঝিরে পাতার শিরশিরানি সকলের
অলক্ষ্যে রাধার কোমলতাকে স্পর্শ করে ।
কানে কানে বলে –“মুখ তোলো, অবগুণ্ঠন খোলো!
এবার আড়ালটুকু সরিয়ে রেখে এসো
দুজনায় কুঞ্জ সাজাই ….”
কিছু পাওয়ার চঞ্চলতায় রাধার সর্বাঙ্গে শিহরণ …
বনের পাখি গেয়ে উঠে মৌমাছিদের বার্তা পাঠায় –
“এসো, রাধিকার রূপ দেখে যাও –“
ঢেউ ওঠে দুজনের পল্লবিত শাখায় —
বসন্ত উৎসবের স্বপ্নে হৃদয় ভরে বনদেবীর ।